Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

ইতিহাস

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বর্তমানে বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে পৃথিবীর অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় গ্রহণের পর সরকার কর্তৃক ২০০৯ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা ২০০৯ (বিসিসিএসএপি, ২০০৯)  চুড়ান্ত করা হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এই ধরণের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করে। বিসিসিএসপি ২০০৯ এ বর্ণিত কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (সিসিটিএফ) গঠন করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশের অর্থ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা না করে নিজস্ব অর্থায়নে এ ধরণের তহবিল গঠন বিশ্বে প্রথম যা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিশেষভাবে প্রসংশিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা ২০০৯ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের রাজস্ব বাজেট হতে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (সিসিটিএফ) গঠন করা হয়।  জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করাই বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বলবৎ করা হয় জলবায়ু ট্রাস্ট আইন-২০১০। দেশ ও দেশের জনগণকে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য মহান জাতীয় সংসদে এ ধরনের একটি আইন পাশ করার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। উক্ত আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর নেতৃত্বে ১০ জন মাননীয় মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য ও সিভিল সোসাইটির দুই জন বিশেষজ্ঞসহ মোট ১৭ জন সদস্য নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ট্রাস্টি বোর্ড  গঠন করা হয়েছে। উক্ত বোর্ডকে সহায়তা করার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন-১০ এর ধারা ৩ মোতাবেক ২৪ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট (বিসিসিটি) গঠন করা হয়েছে। ইতোপূর্বে গঠিত ক্লাইমেট চেঞ্জ ইউনিট এর জনবলসহ সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি উক্ত ট্রাস্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ এর আওতায় গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ড এবং কারিগরি কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনসহ এ ট্রাস্ট ফান্ডের অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ট্রাস্টের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

ভিশন ও মিশনঃ

ভিশন: জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় সক্ষম বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

মিশন:

  • জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা, ২০০৯ অনুসারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
  • জলবায়ু পরিবর্তজনিত কারণে মানুষ, জীববৈচিত্র ও প্রকৃতির উপর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন, প্রশমন, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অর্থায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা বা করার পক্ষে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ।
  • কার্বন নি:সরণের মান কমানোর লক্ষ্যে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিকরণ।

বিসিসিটি’র লক্ষ্যঃ

  • জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ অলের জনসাধারণে বা জনগোষ্ঠীর খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা;
  • জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে মানুষ, জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতির উপর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজন, প্রশমন, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অর্থের ব্যবস্থা গ্রহণ করার বা করার পক্ষে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা।

 

বিসিসিটি’র উদ্দেশ্যঃ

  • সরকারের উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের বাইরে বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় এ ট্রাস্ট তহবিল ব্যবহার;
  • জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
  • জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্প বা কর্মসূচি গ্রহণ;
  • জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন (Adaptation), প্রশমন, (Mitigation), প্রযুক্তি হস্তান্তর (Technology Transfer), এবং অর্থ বিনিয়োগ (Finance & Investment) এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক গবেষণা  এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের আলোকে উপযুক্ত বিস্তারসহ পাইলট কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
  • জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো এবং ক্ষতিগ্রস্থতা মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং এর ভিত্তিতে কর্মসূচি বা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয় সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক বা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ পরবর্তী জরুরী কার্যক্রমে সহায়তা করা।